ঢাবির ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা দিলেন ৫৫ বছর বয়সী বেলায়েত

ঢাবির ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা দিলেন ৫৫ বছর বয়সী বেলায়েত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন ৫৫ বছর বয়সী বেলায়েত শেখ। ঢাবির ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় আজ শনিবার অংশ নেন তিনি।
উচ্চমাধ্যমিক পড়ুয়া ছোট ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে পরীক্ষা দিতে যান বেলায়েত। ঢাবির গণিত ভবনের ৮০২ নম্বর কক্ষে তাঁর সিট বরাদ্দ ছিল।  ভর্তি পরীক্ষা শুরুর আগে বেলায়েত শেখ এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘পরীক্ষায় ভালো করতে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেওয়ার চেষ্টা করেছি। তারপরও অন্যান্য পরীক্ষার্থীদের জন্য হয়তো এটি একটি লেক বা খাল পাড়ি দেওয়ার মতো, কিন্তু এ বয়সে এসে এত বড় প্রতিযোগিতার পরীক্ষা দেওয়াটা আমার জন্য বিরাট এক সাগর পাড়ি দেওয়ার মতো।’  পরীক্ষা শেষে বেলায়েত বলেন, ‘পরীক্ষা মোটামুটি ভালো হয়েছে। তবে, আমার লেখার গতি কম থাকার কারণে এবং সময় শেষ হয়ে যাওয়ায় সবগুলো প্রশ্নের উত্তর দিতে পারিনি। চান্স পাওয়া না পাওয়া তো বড় কিছু না। পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছি, আমাকে দেখে ছেলে-মেয়েরাসহ অনেকেই অনুপ্রাণিত হয়েছেন বা হবেন এবং সারা দেশের মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি, এটাই আমার জন্য অনেক বড় কিছু।’  বেলায়েতের সঙ্গে আসা তাঁর ছোট ছেলে সাদেক শেখ জীবন বলেন, ‘আব্বু যে এ বয়সে পরীক্ষা দিয়েছেন, এটা আমার নিজের কাছে অনেক ভালো লেগেছে। কারণ, এ বয়সে কয়জনের এই ইচ্ছাটুকু থাকে? ওনার প্রবল ইচ্ছা শক্তি ছিল বিধায় তিনি আজকের এ অবস্থানে আসতে পেরেছেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা দিতে পেরেছেন।’  জীবন আরও বলেন, ‘এখন আমি গাজীপুরের শ্রীপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের উচ্চমাধ্যমিকের প্রথম বর্ষের ছাত্র। আব্বুকে এত সংগ্রাম করে এখানে পরীক্ষা দিতে দেখে আমি অনুপ্রাণিত, আমরা সবাই অনুপ্রাণিত। ভবিষ্যতে আমিও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দেব এবং ভর্তি হওয়ার চেষ্টা করব।’  জানা গেছে, যখন বেলায়েত হোসেনের বয়স ৫০ বছর, তখন নবম শ্রেণিতে ভর্তি হন তিনি। এরপর ২০১৯ সালে তিনি রাজধানী ঢাকার দারুল ইসলাম আলিম মাদ্রাসা থেকে ৪ দশমিক ৪৩ জিপিএ পেয়ে দাখিল পাস করেন। ২০২১ সালে রামপুরার মহানগর কারিগরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে ৪ দশমিক ৫৮ জিপিএ পেয়ে এইচএসসি পাস করেন তিনি। অবশেষে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন পূরণের প্রস্তুতি নিতে একটি বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি কোচিংয়ের মাওনা শাখায় ভর্তি হন বেলায়েত শেখ।  বেলায়েত শেখের জন্ম ১৯৬৮ সালে। তিনি গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভার কেওয়া পশ্চিমখণ্ড এলাকার মৃত হাসেন আলী শেখ ও জয়গন বিবির সন্তান। ছোটবেলা থেকেই খুব কাছ থেকে অভাব দেখেছেন তিনি। এর মধ্যেই পড়াশোনা চালিয়ে গেছেন।  বেলায়েত ১৯৮৩ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন। কিন্তু, পারিবারিক অস্বচ্ছলতা ও তাঁর বাবার দুরারোগ্য ব্যাধির কারণে পড়াশোনা ছেড়ে পরিবারের হাল ধরতে হয় তাঁকে। ফলে, ১৯৮৩ সালে এসএসসি পরীক্ষা দেওয়া হয়নি তাঁর। এজন্য উচ্চশিক্ষা নেওয়ার স্বপ্নটাও আর পূরণ হয়ে ওঠেনি। পরবর্তী সময়ে অপূর্ণ সে স্বপ্ন ভাই ও সন্তানদের মাধ্যমে পূরণ করার চেষ্টা করেছেন তিনি। এজন্য ৫০ বছর বয়সেই জেদ করে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শেষ করে অবশেষে ৫৫ বছর বয়সে ঢাবির সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেন বেলায়েত শেখ।


উচ্চমাধ্যমিক পড়ুয়া ছোট ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে পরীক্ষা দিতে যান বেলায়েত। ঢাবির গণিত ভবনের ৮০২ নম্বর কক্ষে তাঁর সিট বরাদ্দ ছিল।

ভর্তি পরীক্ষা শুরুর আগে বেলায়েত শেখ এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘পরীক্ষায় ভালো করতে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেওয়ার চেষ্টা করেছি। তারপরও অন্যান্য পরীক্ষার্থীদের জন্য হয়তো এটি একটি লেক বা খাল পাড়ি দেওয়ার মতো, কিন্তু এ বয়সে এসে এত বড় প্রতিযোগিতার পরীক্ষা দেওয়াটা আমার জন্য বিরাট এক সাগর পাড়ি দেওয়ার মতো।’

পরীক্ষা শেষে বেলায়েত বলেন, ‘পরীক্ষা মোটামুটি ভালো হয়েছে। তবে, আমার লেখার গতি কম থাকার কারণে এবং সময় শেষ হয়ে যাওয়ায় সবগুলো প্রশ্নের উত্তর দিতে পারিনি। চান্স পাওয়া না পাওয়া তো বড় কিছু না। পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছি, আমাকে দেখে ছেলে-মেয়েরাসহ অনেকেই অনুপ্রাণিত হয়েছেন বা হবেন এবং সারা দেশের মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি, এটাই আমার জন্য অনেক বড় কিছু।’

বেলায়েতের সঙ্গে আসা তাঁর ছোট ছেলে সাদেক শেখ জীবন বলেন, ‘আব্বু যে এ বয়সে পরীক্ষা দিয়েছেন, এটা আমার নিজের কাছে অনেক ভালো লেগেছে। কারণ, এ বয়সে কয়জনের এই ইচ্ছাটুকু থাকে? ওনার প্রবল ইচ্ছা শক্তি ছিল বিধায় তিনি আজকের এ অবস্থানে আসতে পেরেছেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা দিতে পেরেছেন।’

জীবন আরও বলেন, ‘এখন আমি গাজীপুরের শ্রীপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের উচ্চমাধ্যমিকের প্রথম বর্ষের ছাত্র। আব্বুকে এত সংগ্রাম করে এখানে পরীক্ষা দিতে দেখে আমি অনুপ্রাণিত, আমরা সবাই অনুপ্রাণিত। ভবিষ্যতে আমিও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দেব এবং ভর্তি হওয়ার চেষ্টা করব।’

জানা গেছে, যখন বেলায়েত হোসেনের বয়স ৫০ বছর, তখন নবম শ্রেণিতে ভর্তি হন তিনি। এরপর ২০১৯ সালে তিনি রাজধানী ঢাকার দারুল ইসলাম আলিম মাদ্রাসা থেকে ৪ দশমিক ৪৩ জিপিএ পেয়ে দাখিল পাস করেন। ২০২১ সালে রামপুরার মহানগর কারিগরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে ৪ দশমিক ৫৮ জিপিএ পেয়ে এইচএসসি পাস করেন তিনি। অবশেষে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন পূরণের প্রস্তুতি নিতে একটি বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি কোচিংয়ের মাওনা শাখায় ভর্তি হন বেলায়েত শেখ।

বেলায়েত শেখের জন্ম ১৯৬৮ সালে। তিনি গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভার কেওয়া পশ্চিমখণ্ড এলাকার মৃত হাসেন আলী শেখ ও জয়গন বিবির সন্তান। ছোটবেলা থেকেই খুব কাছ থেকে অভাব দেখেছেন তিনি। এর মধ্যেই পড়াশোনা চালিয়ে গেছেন।

বেলায়েত ১৯৮৩ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন। কিন্তু, পারিবারিক অস্বচ্ছলতা ও তাঁর বাবার দুরারোগ্য ব্যাধির কারণে পড়াশোনা ছেড়ে পরিবারের হাল ধরতে হয় তাঁকে। ফলে, ১৯৮৩ সালে এসএসসি পরীক্ষা দেওয়া হয়নি তাঁর। এজন্য উচ্চশিক্ষা নেওয়ার স্বপ্নটাও আর পূরণ হয়ে ওঠেনি। পরবর্তী সময়ে অপূর্ণ সে স্বপ্ন ভাই ও সন্তানদের মাধ্যমে পূরণ করার চেষ্টা করেছেন তিনি। এজন্য ৫০ বছর বয়সেই জেদ করে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শেষ করে অবশেষে ৫৫ বছর বয়সে ঢাবির সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেন বেলায়েত শেখ।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url